আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভোলায় বাস শ্রমিক ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২ জনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এসময় অগ্নিসংযোগে পুড়ে গেছে ৩ টি বাস ৮টি সিএনজি। ভাঙচুর করা হয়েছে আরো ১০টি বাস ২০ সিএনজি। বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, নৌবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাসস্ট্যান্ডে মোতায়েন থাকলেও সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টা থেকে বুধবার এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে দফায় দফায় হামলা, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে ভোলা টু চরফ্যাশন সড়কে সাত উপজেলাসহ খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ সকল প্রকার দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন সিএনজি ও বাস মালিকদের মধ্যে সিএনজি চলাচল এবং স্টান্ড নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭থেকে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং এক পর্যায়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। প্রথমে ইট পাটকেল নিক্ষেপ দিয়ে শুরু হলেও পরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বাস ও সিএনজি শ্রমিকরা। এ ঘটনায় ৮টি সিএনজি ও ৩টি বাস পুড়ে যায়। ভাঙচুর করা হয় আরো ১০ বাস ও ২০টি সিএনজি । খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনীসহ বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২ জনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে সাংবাদিক টিপু সুলতান, গিয়াস উদ্দিন (৩৫) সালাউদ্দিন (৩৫), নুরুল আমিন (৬৫), রাকিব (২৮), সুমন (২২), সোহেল (৩৫) নাম পাওয়া গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
এ বিষয়ে বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা বলেন, পৌর সভার নির্দেশ অনুযায়ী সিএনজি মালিকদের আমরা স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি সরিয়ে নিতে বলেছি। এ কারণে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাদের বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পুনরায় বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সৃষ্টি হয়। এ সময় কয়েটি বাস ভাঙচুর এবং তিনটি সিএনজিতে আগুন দেয় ভিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরে পুলিশ নৌবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সিএনজি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন বলেন, এ ঘটনা বাস মালিক সমিতির পরিকল্পিত। আগে বাস সরিয়ে নিয়ে আমাদের সিএনজির উপরে তারা আগুন দেয়। আমরা সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে ডাকাডাকি করার পরেও তারা গেট বন্ধ করে দেয় এবং আমাদের সিএনজির আগুন নেভায় নাই। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার সরকার বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কতজন হতাহত হয়েছে আমরা এখনো নিরূপণ করতে পারিনি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ভোলার জেলার প্রশাসক মোঃ আজাদ জাহান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফুল হক।